Updates

জনসাধারণ কোথায় যাবে? কার কাছ থেকে ইলম নিবে?

জানুয়ারি ১০, ২০২৫ Uncategorized

কেউ যদি ইখলাসের সাথে কোনো ভালো আলেম খোঁজ করা শুরু করে তখন সে দেখবে যে আমিতো ভালো আলেমই খুঁজে পাচ্ছিনা।আমি নিজেই ভালো আলেম হয়ে যায়।এভাবে সে একদিন ভালো আলেম হয়ে যাবে তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়ে যাবে।
জান্নাতটা এতো সহজ না।দুনিয়ার উপর দিয়ে যেতে হবে।আর দুনিয়াকে কন্ট্রোল করার জন্য সবচেয়ে সহজ নিয়ম হলো জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রে যা প্রয়োজন এর বেশি না করা।আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করা।ঈমান আমলের জন্য নিজেই আলেম হয়ে যাওয়া।এজন্য আল্লাহর কাছে অনেক বেশি দু’আ করা।হে আল্লাহ তুমি আমাকে ক্ষমা করো,আমাকে হেদায়েতের উপর রাখো আমাকে ইসলাম বিদ্বেষী,ইসলাম অপব্যাখ্যাকারী,ভুল কিছু শেখায় এসব আলেম থেকে হেফাজত করুন।
رَّبِّ زِدۡنِىۡ عِلۡمًا [١]
رَبِّ اشْرَحْ لِى صَدْرِى، وَيَسِّرْ لِىٓ أَمْرِى،وَاحْلُلْ عُقْدَةً مِّن لِّسَانِى،
يَفْقَهُوا قَوْلِى[٢]
اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ عِلْمًا نَافِعًا، وَرِزْقًا طَيِّبًا، وَعَمَلًا مُتَقَبَّلًا [٣]
এই দু’আগুলো বেশি বেশি পড়তে হবে।একটা আয়াত যদি মুখস্থ করতে ১০ মিনিট লাগে তাহলে আরো এক ঘন্টা দু’আ করতে হবে আল্লাহﷻ এর কাছে।
রব্বানা কুলুবানা….
ইয়া মোকাল্লিবাল কুলুব
এই জিকির আজকার,দু’আ দরুদ মানুষের জিহব্বাটাকে ভিজিয়ে রাখেন তাহলে মৃত্যুর আগে এক ঘন্টা আগে হলেও আল্লাহﷻ আপনাকে সঠিক পথ দিবেন ইন শা আল্লাহ।
মানুষ আসলে প্রবৃত্তির অনুসরণ করে,শয়তানের অনুসরণ করে।যার কাছ একটু ভালো লাগে তার কাছ থেকেই ইলম নেওয়া শুরু করে দেয়। শয়তানে আয়াতুল কুরসি শিখিয়ে দিছে তাহলে শয়তানের অনুসরণ করবো!?হাদিস টা কি জানা নেই?
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত শয়তান এসে আয়াতুল কুরসি শিখিয়ে দিয়েছে।
অধিকাংশ মানুষ সঠিক পথটা বুঝেনা কিভাবে সঠিক গাইডলাইনটা পেতে পারে সেটা বুঝেনা।ইমাম ইবনে হাযম রাহিমাহুল্লাহ তিনি একদিন আসরের সময় মসজিদে ঢুকলেন আযান দেওয়া হয়ে গেছে তিনি বসে পড়লেন।একজন এসে বললো আপনি বসে পড়লেন কেনো?দুই রাকাআত নামায পড়ে তারপরে বসেন।
দ্বিতীয় দিন,তিনি আসরের পর মসজিদে ঢুকলেন তারপরে তিনি দুই রাকাআত নামায পড়লেন লোকেরা বললো এখনতো নিষিদ্ধ সময় আপনি কেনো এখন নামায পড়লেন!?এখন উনি পড়েছে বিপদে।কোনদিকে যাবে?নামায পড়লেও তাও দোষ আবার না পড়লেও দোষ।যদিও সঠিক মত হচ্ছে আসরের পর নিষিদ্ধ সময় হলেও তাহিয়াতুল মসজিদ দুই রাকাআত নামায পড়া যায়।এটাই উত্তম।যদিও যারা ফতোয়া দিয়েছে তারা ভুল দিয়েছে।ঘটনা হলো আসরের নিষিদ্ব সময়ে নফল নামায পড়তে হয়না।এখন উনার রাগ উঠে গেছে।ব্যাপারটা কি আমি যাই করি সব ভুলভাল।এভাবে তিনি পরবর্তীতে একজন আলেম হয়ে গেলেন।উনার ৪০ ঘন্টার একটা কিতাব আছে।
আপনারা কোন আলেমের কথা শুনবেন যে আলেমরা বিষযুক্ত,হিংসাযুক্ত কথা বলে?নাহ!!
আপনারা এমন আলেমের কথা শুনুন যারা বিষমুক্ত,হিংসামুক্ত যা বলে আল্লাহর জন্য বলে।যাদের আক্বীদাহ সহীহ ইখলাসপূর্ণ।যারা কুরআন হাদিস অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করে এদেরকে আপনি ফলো করুন।ফেসবুক ইউটিউবে লাইক সাবস্ক্রাইব দেখে নয়।আপনি যদি নির্ভরযোগ্য কোনো আলেমের নাম না জানেন তাহলে বাদ দিন জানার দরকার নেই কুরআন হাদিস পড়া শুরু করে দিন।আপনি যেখানে একটু কম বুঝবেন সেটা অন্য কাউকে বলবেন যে ভাই আমাকে এটা বুঝিয়ে দিবেন সঠিকভাবে!?এভাবে আপনি ১০০ টাকে বললে তাদের উত্তর দেখেই বুঝে যাবেন কে সঠিক আর বেঠিক।
ঐসকল আলেমদেরকে কিভাবে আপনারা গুরুত্ব দেন বা তারা কিভাবে তারা নিজেদের আলেম বলে পরিচয় দেয় যে তারা কুরআন হাদিস মুখস্থকে গুরত্ব দেয়না।যারা দৈনিক ২/৪ ঘন্টা পড়াশোনার প্রতি গুরুত্ব দেয়না।যাদের ঈমান আমলের ঠিক ঠিকানা নেই।যারা বিভ্রান্ত বানিয়ে বানিয়ে কথা বলে। আরো ভয়ানক হচ্ছে যারা এই কথাটুকু বলেনা আমার বিদ্যাবুদ্ধি কম আপনারা কুরআন হাদিস দেখে শিখে পেলেন।বাংলাদেশের কোনো আলেম থেকে এমন কথা আজ পর্যন্ত শুনলামনা।
আল্লাহর শপথ করে বলছি,বর্তমান সময়ের আলেমগুলো আলেম নামে ধোঁকাবাজ।সালফি হোক আর গায়রে সালাফি হোক এরা কেউই নির্ভরযোগ্য আলেম না।এগুলো আলেমের ছিটাফোঁটা।আমি সহ যারা আছি মাদানি হোক গায়রে মাদানি হোক যাইহোক না কেনো আলেম নয়।কিন্তু আমরা আলেমদের বইপুস্তক গুলো ছিনি,আলেমদের দেখেছি।আমরা আলেমদের ছাত্রওনা।আমরা সাধারণ লোকদের কাতারে পড়ি।
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কোনো আলেমের জন্ম হয়নি যে সে অন্য কোনো আলেমদের ফতেয়া না দেখে ফতোয়া দেয়।আপনারা যাদেরকে নির্ভরযোগ্য সঠিক আলেম মনে করেন বাংলাদেশ থেকে আমাকে হোক বা যাকে হোক আমরা কেউই কুরআন এবং হাদিস দেখে নির্ভেজাল কোনো ফতোয়া বের করতে পারিনা যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা আট/দশজনের ফতোয়া না দেখি।
আমরা কুরআন এবং হাদিস থেকে ফতোয়া দেখে দেখে বলতে হয়।এগুলো বলতে পারলে বড়ো আলেম হয়ে গেলো।এরা সবোর্চ্চ দেখতে জানে গবেষণা করতে জানে দশজন আলেম কি বলেছে।তখন বলা উচিৎ ঐ দশজন আলেম হচ্ছে।আলেম আমরা আলেম না।এই কথাটুকু কখনো কোনো মানুষের মুখে বলতে শুনলামনা।তাহলে জনগণ তাদের কাছে বিভ্রান্ত হবে নাতো কার কাছে হবে।
কুরআন ও হাদিস আল্লাহর সম্পদ।আল্লাহর ইলম এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে।ইমাম শাফেঈ রাহিমাহুল্লাহ যিনি যুগ শ্রেষ্ঠ আলেম।পৃথিবীর সকল উলামায়ে কেরামগণ একমত যে ইমাম শাফেঈ একজন নির্ভরযোগ্য আলেম।তিনি বলেছেন,
“আফসোস আমার জন্য,এটা আমার জন্য কতোই না ভালো হতো কোনো মানুষ যদি কোনো কথা আমার দিকে সমন্ধন না করতো।”
এবার আপনারা বুঝেন,তাকে আপনারা আলেম বানাচ্ছেন আলেম মনে করেন?তারা কিভাবে খুশি হয় তাকে আলেম বলে।ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন।
আমি আপনাদেরকে এসব থেকে সতর্ক করছি এসব আলেম থেকে।আল্লাহﷻ তথাকথিত এসকল আলেম থেকে হেফাজত করুক।আপনারা বলবেন যে,আপনারা আলেমদের সাথে ওঠাবসা করেছেন।আপনাদেরকে সম্মান করি ভালোবাসি কুরআন হাদিস ভালোবাসেন দেখে।কিন্তু তাদেরকে নির্ভরযোগ্য আলেম মনে করতে পারিনা।
ইমাম মালেক রাহিমাহুল্লাহ উনার কাছে দূর থেকে একজন লোক এলো জানগণ থেকে ৪০টি মাসআলার উত্তর জানার জন্য।সেটা ইমাম মালেক রাহিমাহুল্লাহ কে জিজ্ঞেস করলে তিনি ৪ টার উত্তর দিয়েছে বাকি ৩৬ টি দিতে পারেননি।তখন লোকটি বললো আমি এতোদূর থেকে এসেছি ফিরে গেলে লোকে আমাকে কি বলবে!?তখন ইমাম মালেক বললেন আপনি বলবেন যে ইমাম মালেক জানেনা।আমার কাছে আন্দাজে একটা মাসআলা বলার জন্য হাশরের মাঠে আল্লাহর জবাবদিহির মুখোমুখি হওয়া ভালো নাকি মানুষ আমাকে কি ভাবলো সেটা ভালো?সুবহানাল্লাহ উনারা কতো বিনয়ী ছিলেন এজন্য তিনিও শ্রেষ্ঠ আলেমদের মধ্যে একজন। তারা মানুষকে শিক্ষার কথা বলতো।উনারা না জানলে বলতো আমি জানিনা কুরআন হাদিস থেকে দেখে নিন।
আজ বাংলাদেশে যতো আলেম না তারা হাফেজ না ফক্বীহ,না মুহাদ্দিস,না ভাষাবিদ,কি জানে?ক্লাসের পড়ালেখা করলে কোনোদিন আলেম হওয়া যায়!?
আল্লাহﷻ আমাকে আপনাকে সবাইকে হেফাজত করুক। আলেম জিনিসটা সূর্যের মতো সূর্য যেমন হাতে ধরা যায়না ঐ আলেমও হাতে পাওয়া যায়না।আমাদের দেশে ভালো কোনো আলেম নেই।এখনকার একশোটা আলেম তখনকার আগের যুগের একটার আলেমের সমান।এক লক্ষ সালাফি আলেম মিলিয়ে হবেনা ইবনে উসাইমিনের মতো।তবুও আপনারা ঐ আলেমদের নিয়ে পড়ে আছেন।কেনো আপনারা তাদের কথা শুনতে হবে কুরআন হাদিস আপনাদের নেই!? আল্লাহ আপনাদের বুঝ দান করুক হেদায়েত দান করুক।গুনাহ গুলো মাফ করুক।কুরআন হাদিসের প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি করে দিন।আল্লাহুমা আমিন।
❑তথ্যসূত্র
.
[١].সূরা ত্বহা আয়াত ১১৪
[٢].সূরা ত্বহা আয়াত ১২৫-১২৮
[٣].ইবনে মাজাহ হাদিস নং ৯২৫

হোয়াটসাঅ্যাপ চ্যাট
মেসেঞ্জার চ্যাট
লোডিং হচ্ছে...