নিঃসন্দেহে ইন্টারনেট ও মোবাইল online, social media মহান আল্লাহর অলৌকিক সৃষ্টির মধ্যে আশ্চর্যজনক সৃষ্টি এতে কোন সন্দেহ নেই, এটা এতটাই আশ্চর্যজনক জিনিস, যা আমরা আজ থেকে ৫০ বছর পূর্বে কল্পনাও করতে পারতাম না।
শুধু তাই নয়, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: কিয়ামতের পূর্বে পৃথিবী তার সকল সৌন্দর্য বের করে দিবে তারপর কিয়ামত সংগঠিত হবে।(ভাবার্থ)
আর অনলাইন, ইন্টারনেট, এগুলো পৃথিবীর মহা সুন্দর্যময় জিনিস, ঘরের মধ্যে বসে বসে আত্মীয়-স্বজনের সাথে বারবার যোগাযোগ করা, ঘরে বসে ছবি ভিডিও আদান প্রদান, পৃথিবীর যেকোনো খবরা- খবর সবকিছুই যেন চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি, তাই এসব নিয়ামতের উপর আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা উচিত।
যেহেতু অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষা-দীক্ষার ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত সুন্দর এবং সহজ যা সামনাসামনি বসে শিক্ষা করার চাইতেও কোন অংশে কম নয়, বরং তুলনামূলক বলা যায় অনলাইন মাধ্যমিক শিক্ষা সবচাইতে উত্তম মাধ্যম এবং নিরাপদ।
তবে এ কথা খুব নিশ্চিত যে ভবিষ্যতে অফলাইন প্রতিষ্ঠানের চাইতেও কোন এক সময় অনলাইন প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব আরো বহুগুণী বেড়ে যাবে এবং তারও কিছুদিন পর দুনিয়ার সকল গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালিত হবে অনলাইন মাধ্যমেই, তখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল অবকাঠামো হবে অনলাইন এটা খুব সহজেই অনুমান করা যায়।
তাই অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হলে তা অবহেলার চোখে দেখার কিছুই নেই বরং অনলাইন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপকারিতা স্বয়ং সরাসরী মাদ্রাসা বা স্কুলের চাইতেও বহুগুণ উপকারী যদি তার সঠিক ব্যবহার হয়।
অর্থাৎ কোমলমতি শিশু-সন্তানগুলো যদি বাবা-মার চোখের সামনেই ইন্টারনেট, মোবাইল ব্যবহার করে এবং প্রতিনিয়ত অভিভাবকের চোখের সামনে চলাফেরা করে, তাহলে তাদের অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম, নিয়মিত তদারকির কারণে শয়তান তাদের প্ররোচনা ও ধোকা দেওয়ার সুযোগ পাবে না। যার ফলে এই ইন্টারনেট ও মোবাইলের মাধ্যমে তাদের পদস্খলন হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকবে। তবে কোমলমতি শিশুদের হাতে মোবাইল এবং ইন্টারনেট একদম ফ্রি করে দেওয়া যাবে না, তাদের ইচ্ছা মত মোবাইল ব্যবহারের অনুমতি দিলে শয়তান সুযোগ পাবে, তখন অজান্তেই মনের ওয়াসওয়াসার কারণে তারা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে গিয়ে অনৈতিক কর্মকান্ডে আসক্ত হয়ে পড়তে পারে। আর কোন ভাবে তারা একবার সুযোগ পেয়ে গেলে সেখান থেকে বের করে নিয়ে আস সবার জন্য অনেক কঠিন হয়ে পড়বে।
তাই সতর্কতা অবলম্বনের মাধ্যমে ইন্টারনেট ও মোবাইল, লেপটপ ইত্যাদী সঠিক ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি সকল শিক্ষা কার্যক্রম সুন্দর মত পরিচালিত করতে পারেন। মোবাইল, লেপটপ সঠিক ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনার সন্তান অনলাইনের মাধ্যমেই সঠিক ইসলাম শিখতে পারবে এবং নির্ভরযোগ্য হাফেজ এবং নির্ভরযোগ্য আলেম হিসেবে গড়ে উঠবে ইনশাআল্লাহ তবে অবশ্যই প্রয়োজন আপনাদের সতর্কতা এবং দূরদৃষ্টি ও তদারকি।
অনলাইনে শিশুদের শিক্ষা দেওয়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ:
যে সব প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র-ছাত্রীরা অবস্থান করে বা আবাসিক ব্যবস্থাপনা রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর ছাত্রাবাসে বহু অনৈতিক কার্যকলাপ পরিলক্ষিত হয়।
বিশেষ করে শিশু ও ছোট ছাত্র-ছাত্রীদের সাথেও যৌনাচার ও বলাৎকারের মত ঘৃণিত ও হৃদয়বিদারক ঘটনাও অহরহ ঘটে থাকে। এটা বিশ্বাস করাও অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও একদমই সত্য। এজন্য সৌদি আরবের মতো জায়গাতে ছোট ছাত্র ছাত্রীদের জন্য আবাসিক কোনো প্রতিষ্ঠান নেই।
এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি খুবই স্বাভাবিক হওয়ায় বাংলাদেশের বড় বড় ওলামায়ে কেরামগণ তারা কঠিন ভাবে নিষেধ করেছেন। কারণ এখন মানুষের ঈমান প্রচুর দুর্বলম যার ফলে নিজেকে অধিকাংশ মানুষ কন্ট্রোল করতে পারে না। তাই সতর্ক থাকাই ভালো।
এমন পরিস্থিতিতে শিশু সন্তানদেরকে সঠিক ইসলাম শিক্ষা দেওয়ার জন্য অনলাইন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চাইতে উত্তম কোন মাধ্যম আমার জানা নেই।
তবে অনলাইন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা বিভিন্ন কোর্সের নামে ইন্টারনেট ও মোবাইলের অপব্যবহারের কারণেও বেশ দুঃসংবাদ শুনতে হয়, এ দিক থেকে ইন্টারনেট ব্যবহারের ভয়াবহতাও বোঝা যায় কিন্তু সতর্ক থাকলে আর কোন সমস্যা নেই ইনশাআল্লাহ।
যেহেতু অনলাইনে বিভিন্ন কোর্সের শিক্ষার্থীদের ভিতর এটাও খুব অহরহ ঘটছে যে, অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন ভাবে প্রেম, পরকীয়া ও বিভিন্ন খারাপ রিলেশনে জড়িয়ে যাচ্ছে। তবে এর জন্য প্রথমত দায়ী হচ্ছে শিক্ষার্থীদের চারিত্রিক দুর্বলতা এবং সেই সাথে তাদের অভিভাবকদের চরম উদাসীনতা।
কারণ প্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষার্থীদের হাতে বিবাহের পূর্বেই মোবাইল একদম স্বাধীন করে ছেড়ে দেওয়া এটা নিতান্তই মূর্খতা ও উদাসীনতার প্রমাণ। এভাবে প্রাপ্ত বা অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং কম বয়সী অবিবাহিত ছেলে মেয়েদের হাতে ইচ্ছেমত স্বাধীনভাবে মোবাইল ছেড়ে দেওয়া বৈধ নয়। এটি আমানতের খিয়ানত। তাই তাদের নৈতিক চরিত্রের ব্যাপারে আপনাদের সতর্ক থাকা আবশ্যক।
আর আমরা সবাই জানি ’সাবধানের মাইর নাই’ আর ’সতর্কতার বিকল্প নেই’।
তবে এটা চরম সত্য যে দায়িত্বশীল অভিভাবকগণের পরিচালনায় তাদের সন্তান অনৈতিক কাজে লিপ্ত হতে সুযোগও পাবে না এবং সাহসও পাবে না। যার ফলে সঠিক দিক নির্দেশনা ও সঠিক পরিচালনার মাধ্যমে সন্তান সঠিক পথেই পরিচালিত হবে এবং ন্যায়ের উপর অটল থাকবে ইনশাআল্লাহ।